ক্লিক
করে আয় অত্যন্ত জনপ্রিয় কারন কাজটি খুব সহজ। যদিও এতে আয় একেবারেই সামান্য
তাহলেও কিছুটা হলেও আয় হয়। অন্তত যারা ইন্টারনেটে আয় করতে চান তাদেরকে
আগ্রহি করার জন্য এই পদ্ধতি খুবই কার্যকর। ইন্টারনেটের সামনে কাউকে ধরে
রাখার জন্য এর তুলনা নেই। এরপর ক্রমে অন্য কাজের দিকে মনোযোগ দেয়া সম্ভব
হয়। একারনেই অনেক পিটিসি সাইটই শুধুমাত্র ক্লিক করার পরিবর্তে ছোটখাট কাজ
যোগ করেছে। সেখানে কিছুটা মাথা ঘামাতে হয়, কিছু দক্ষতা প্রয়োজন হয়, সেইসাথে
আয়ও বাড়ে।
একই
ধরনের সহজ আয়ের পদ্ধতি এফিলিয়েটেড মার্কেটিং। ব্লগ, ওয়েবসাইট, ফেসবুক,
ইমেইল ইত্যাদির মাধ্যমে কোন কোম্পানীর প্রচার করে টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা।
এছাড়া রয়েছে ইমেইল পড়ে টাকা আয়, সার্ভে করে টাকা আয় ইত্যাদি নানারকম
ব্যবস্থা।
সমস্যা
হচ্ছে এধরনের সব সাইটকে বিশ্বাস করা যায় না। অনেক কোম্পানীই কাজ করার পর
টাকা দেয় না। সাধারনভাবে এধরনের সাইটকে স্ক্যাম বলা হয়। অত্যন্ত লোভনীয়
প্রচারের মাধ্যমে কাজ করিয়ে নেয় তারপর নিজেরা টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়।
. আপনি
যখন কাজ করবেন (পিটিসি বা অন্যকিছু) তখন টাকা তাদের সাইটে আপনার একাউন্টে
জমা হবে। আপনি জানবেন আপনার নামে টাকা জমা হচ্ছে। কিন্তু যখন আপনি সেটা
নিজের একাউন্টে পাঠাতে চেষ্টা করবেন তখন নানারকম সমস্যার সম্মুখিন হবেন।
হয়ত আপনার একাউন্টে ঢুকতে পারবেন না, কোন অজুহাত দেখিয়ে আপনার একাউন্ট বন্ধ
করে দেয়া হবে। এভাবে যথেষ্ট আয় হলে এবং বিষয়টি প্রচার পেলে সাইট বন্ধ করে
দেবে।
. আপনাকে
হয়ত বলা হয়েছে ১০০ ডলার জমা হলে আপনি টাকা উঠাতে পারবেন। এর কাছাকাছি গেলে
আপনার হিসেব যোগ করা বন্ধ করে দেবে। আপনার আয় কখনোই উঠানোর পর্যায়ে যাবে
না।
যেভাবেই করা হোক না কেন, মুল বিষয় হচ্ছে তারা নিজেরা টাকা নিচ্ছে বিজ্ঞাপনদাতার কাছে, সেই টাকা আপনাকে দিচ্ছে না।
এধরনের
স্ক্যাম সাইট চেনার জন্য কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। যদিও একথা মনে রাখা
জরুরী, একটি সাইট নির্ভরযোগ্য, আরেকটি স্ক্যান এভাবে ধরে নেয়ার সম্ভব হয় না
কারন এর মাঝামাঝি যায়গায় বহু সাইট রয়েছে। যারা পুরো ঠকায় না, কিংবা সবাইকে
ঠকায় না। ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য কিছু খরচ করে। কাজেই আপনার দৃষ্টিভঙ্গি
হতে পারে সাইটকে তিনভাগে ভাগ করা। একধরনের সাইট নির্ভরযোগ্য, কিছু সাইট
অনিশ্চিত, কাজ করলে টাকা পেতেও পারেন নাও পেতে পারেন, আর প্রমানিত স্ক্যাম
সাইটগুলি ব্যবহার করবেন না।
স্ক্যাম সাইট চেনার জন্য যে পদ্ধতিগুলি কার্যকর।
. সবচেয়ে
সেরা পদ্ধতি সার্চ করে সেই সাইট সম্পর্কে রিভিউ পড়া। কেউ ঠকে থাকলে সেটা
কোথাও প্রকাশ করবেন, অন্যদের শতর্ক করবেন। কোন সাইট সম্পর্কে জানার জন্য
সার্চ করে এধরনের তথ্য পাওয়া যায় কি-না দেখে নিন।
. তাদের
সাইটে গিয়ে নিয়মগুলি ভালভাবে দেখুন। ক্লিক করে দেয়া টাকার পরিমান সাধারনত
দুই সেন্ট (০.০২) ডলারের বেশি হয় না (বিনামুল্যের সদস্যের জন্য)। কেউ যদি
এরথেকে বেশি দিতে চায় তাহলে সেটা ব্যবহার না করাই ভাল।
. সদস্য
হওয়ার জন্য শুরুতেই টাকা দেবেন না। প্রথমে বিনামুল্যে সদস্য হয়ে কাজ করুন।
কিছুদিন কাজ করে টাকা পেলে তারপর টাকা দিয়ে সদস্য আপগ্রেড করুন। টাকা দিয়ে
সদস্য হলে আয় বেশি।
. তাদের
নিয়মগুলি পড়ে দেখুন। সাধারনভাবে ইন্টারনেটে বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য কিছু নিয়ম
মেনে চলা হয়। যেমন পর্নোগ্রাফি সাইটে বা অবৈধ ডাউনলোডের সাইটে, মাদকের বা
ওষুধ বিক্রির বিজ্ঞাপন দেয়া যায় না । প্রতারকরা এই নিয়ম না মেনে যত বেশি
সম্ভব প্রচার করতে চায়। তাদের স্পষ্ট নিয়ম না থাকলে সেটা ব্যবহারে বিরত
থাকুন।
. ফোরাম
আছে কি-না দেখে নিন। ভাল সাইটগুলিতে ব্যবহারকারীদের মন্তব্য লেখার জন্য
এবং টাকা পাওয়ার প্রমান তুলে ধরার জন্য ফোরাম রাখা হয়। অবশ্য কেউ কারিগরি
কারনে বাদ দিতে পারেন। শুলুমাত্র ফোরাম নেই এই কারনে কাউকে স্ক্যাম বলা ঠিক
হবে না।
. তাদের
টাকা উঠানোর সর্বনিম্ন পরিমান জেনে নিন। পিটিসি সাইটগুলিতে ১০ ডলার
পর্যন্ত গ্রহনযোগ্য। অর্থাত ১০ ডলার আয় করলেই সেটা নিজের একাউন্টে পেতে
পারেন। যদি সেটা ১০০ ডলার কিংবা আরো বেশি হয় তাহলে বিশ্বাস করা কঠিন। এর
অর্থ আপনি সেই পরিমান আয়ের জন্য দীর্ঘদিন তাদের হয়ে কাজ করবেন এবং ততদিন
জানার সুযোগ পাবেন না টাকা পাবেন কি-না।
. তাদের
টাকা দেয়ার পদ্ধতি জেনে নিন। অটোমেটেড পদ্ধতি বেশি নির্ভরযোগ্য। এছাড়া
বাংলাদেশের জন্য এলার্ট-পে গ্রহনযোগ্য। অনেকে শুধুমাত্র পেপল কিংবা অন্য
পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন যা বাংলাদেশ থেকে ব্যবহার করা যায় না। আপনি সেই
সাইটে কাজ করতে পারেন না।
. যে
কোন সাইটের নিয়মগুলির দিকে লক্ষ রাখুন। প্রত্যেকের নিয়ম আলাদা, একজনকে
দিয়ে আরেকজনকে বিচার করবেন না। অনেকেই এক বাড়ি থেকে একজনকে ব্যবহারের
অনুমতি দেয়। তারা বিভিন্নভাবে বিষয়টি যাচাই করে। ভুল করলে সাথেসাথে হয়ত
জানানো হবে না, টাকা উঠানোর সময় জানানো হবে।
. বিশ্বস্ত
সাইট ব্যবহার করুন। ক্লিকসেন্স, পিটিসিবক্স ইত্যাদি কোম্পানী দীর্ঘদিন ধরে
কাজ করছে। যারা ব্যবহার করছেন তারা সন্তুষ্ট। কোন সাইট কতদিন ধরে কাজ করছে
বিষয়টির দিকে দৃষ্টি রাখুন। নতুন কোম্পানী সে তুলনায় অনিরাপদ।
যারা
অন্যদের ঠকায় তারা সবসময়ই নতুন নতুন পদ্ধতি আবিস্কার করে। কাজেই আপনি সব
পদ্ধতি জেনে গেছেন এটা ধরে নিলে ঠকার সম্ভাবনা থেকেই যায়। একথামনে রাখাই
ভাল, ইন্টারনেট আয়ের সুযোগ যেমন করে দিয়েছে তেমনি বহু মানুষ একে লোকঠকানোর
কাজে ব্যবহার করছে।
আপনার সচেতনতা যত বেশি ঠকার সম্ভাবনা তত কম।
0 comments:
Post a Comment
THANKS FOR YOUR CO-OPERATION: