ফাইল
আপলোড করে আয় ইন্টারনেট থেকে আয়ের সহজ পথগুলির একটি। অন্তত সেটাই মনে করা
হয়। কাজ হচ্ছে আপনি কোন সাইটে অন্যের কাছে জনপ্রিয় এমন ফাইল আপলোড করবেন।
ইমেজ, মুভি, সফটঅয়্যার, ডকুমেন্ট থেকে শুরু করে যেকোন ধরনের ফাইল হতে পারে।
অন্যরা যখন সেই ফাইল ডাউনলোড করবেন তখন ডাউনলোডের সংখ্যার হিসেবে আপনি
টাকা পাবেন।
এই
কাজের বহু প্রতিস্ঠান রয়েছে। তাদের সফটঅয়্যার ব্যবহার করে আপলোড করার জন্য
তাদের সদস্য হতেহয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিনামুল্যে সদস্য হওয়া যায়, আবার
টাকা দিতে হয় এমন প্রতিস্ঠানও আছে। মোটামুটিভাবে সকলের কাজের পদ্ধতি এক
হলেও টাকার পরিমান, দেশ ইত্যাদি হিসেবে একের সাথে অন্যের পার্থক্য থাকে।
আয়ের লক্ষ্যে এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে যেখানে বেশি আয় হতে পারে এমন যায়গা
খোজ করবেন এটাই স্বাভাবিক।
আপলোড থেকে আয়ের সাধারন কিছু বিষয় জেনে নেয়া যাক।
. প্রত্যেকের টাকা দেয়ার হিসেব প্রতি হাজার ডাউনলোডের জন্য। যেমন কোন প্রতিষ্ঠানে হয়ত ১০০০ বার ডাউনলোড হলে ১০০ ডলার দেয়।
. অধিকাংশ
ক্ষেত্রে দেশভিত্তিক ভাগ থাকে। প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই আমেরিকা-কানাডার
অগ্রাধিকার বেশি। এই দেশ থেকে ডাউনলোড করলে বেশি টাকা পাওয়া দেয়। কোন
প্রতিস্ঠান শুধুমাত্র সেখান থেকে ডাউনলোডকেই হিসেব করে, অন্য দেশের
ডাউনলোডের জন্য টাকা দেয় না। এর পরের সারিতে রয়েছে ইউরোপের কিছু দেশ
(বৃটেন, জার্মানী, ফ্রান্স, ইতালি ইত্যাদি)। কারো কারো মধ্যপ্রাচ্য, পুর্ব
ইউরোপ ইত্যাদির জন্য ভাগ রয়েছে। একেক এলাকার জন্য আয়ের পরিমান একেক রকম।
. ডাউনলোডের
জন্য দেশের ভাগ থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোন দেশ থেকে আপলোড করা হবে
সেক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা নেই। যে কোন দেশ থেকেই আপলোড করে টাকা আয় করা যায়।
. অনেকে
ফাইল সাইজ হিসেব করে টাকার পরিমান ঠিক করে। বড় ফাইলের জন্য বেশি টাকা এই
নিয়মে। কারো কারো সর্বনিম্ন ফাইলসাইজের পরিমান নির্দিষ্ট। যেমন কোন সাইটে ১
মেগাবাইটের নিচের ফাইলকে হিসেব করা হয় না, কোথাও এই মাপ ২৫ মেগাবাইট।
. টাকা
দেয়ার পদ্ধতি একে প্রতিস্ঠানের একক রকম। পেপল, এলার্ট-পে সহ অন্যান্য নানা
ধরনের পদ্ধতিতে টাকা দেয়া হয়। কেউ কেউ শুধুমাত্র পেপল ব্যবহার করে। যেহেতু
সব দেশে পেপল ব্যবহার করা যায় না সেহেতু টাকা গ্রহনের মানানসই পদ্ধতি আছে
কি-না জেনে নেয়া জরুরী।
. ফাইল
শেয়ারিং সাইটগুলিতে নিজের ফাইল যেমন আপলোড করা যায় তেমনি অন্য যায়গা থেকে
ডাউনলোড করেও আপলোড করা হয়। এধরনের সাইটে সবচেয়ে জনপ্রিয় বিষয় হচ্ছে
একেবারে নতুন মুভি, নতুন সফটঅয়্যার, নতুন গেম ইত্যাদি। একারনেই অনেকে ডিস্ক
বাজারে আসার আগেই ক্যামেরা ব্যবহার করে মুভি আপলোড করেন। বেশি ডাউনলোড হয়
বলে এতে বেশি আয় করা যায়।
এখানে জনপ্রিয় কয়েকটি সাইটের পরিচিতি তুলে ধরা হচ্ছে।
সব
দেশ থেকে ব্যবহার করা যায় তবে তারা টাকা দেয় শুধুমাত্র আমেরিকা, বৃটেন এবং
জার্মানীর ডাউনলোডের জন্য। প্রতি ১ হাজার ডাউনলোডের জন্য ৩৫ ডলার। মাসে
একবার পেপল এবং ওয়েবমানির মাধ্যমে টাকা দেয়। তাদের এফিলিয়েশন প্রচার করে
২০% রেফারেল আয় করা যায়।
এরাও
টাকা দেয় আমেরিকা, বৃটেন এবং জার্মানীর জন্য, প্রতি ১ হাজার ডাউনলোডের
জন্য ১০০ ডলার। প্রতি সপ্তাহে পেপল এবং এলার্ট-পে এর মাধ্যমে টাকা দেয়।
টাকা পাওয়ার জন্য কমপক্ষে ২০ ডলার জমা হতে হয়। রেফারেল আয় ৩০%। ফাইলের সাইজ
কমপক্ষে ৫ মেগাবাইট হতে হয়। সব দেশ থেকে ব্যবহার করা যায়।
আমেরিকা,
কানাডা এবং বৃটেনে প্রতি ১০ হাজার ডাউনলোডের জন্য ৫০ ডলার। কমপক্ষে ১০
ডলার জমা হলে প্রতিদিনই টাকা দেয় পেপল, এলার্ট-পে কিংবা ওয়েবমানির মাধ্যমে।
রেফারেল আয় ২৫%।
আমেরিকা,
কানাডা, বৃটেন, জার্মানী এবং অষ্ট্রিয়ার প্রতি হাজার ডাউনলোডের জন্য ৩০
ডলার। টাকা উঠানোর জন্য ৩৫ ডলার জমা হতে হয়। পেপল, এলার্ট-পে, ওয়েবমানির
মাধ্যমে টাকা নেয়া যায়। সর্বোচ্চ ১ গিগাবাইট ফাইল আপলোড করা যায়। রেফারেল
আয় সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য তাদের সাইটে নেই।
ডাউনলোডের সংখ্যার পরিবর্তে তারা একধরনের পয়েন্ট ব্যবস্থা ব্যবহার করে। ২০ হাজার পয়েন্ট হলে আপনি পাবেন ৩৭ ইউরো। রেফারেল আয় ২০%।
সবচেয়ে
জনপ্রিয় সাইটগুলির একটি। আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য সহ অধিকাংশ দেশ থেকে
ডাউনলোডের জন্যই টাকা দেয়। টাকার পরিমান কমবেশি হয় ফাইলসাইজের ওপর ভিত্তি
করে। এর ওপর ভিত্তি করে প্রতি ২ সপ্তাহের পারফরমেন্স হিসেব করে কপার,
ব্রোঞ্জ, সিলভার, গোল্ড, প্লাটিনাম ইত্যাদি রেটিং ঠিক করা হয়। উদাহরন
হিসেবে ৫ থেকে ৫০ মেগাবাইটের ফাইলের জন্য কপার ইউজারের আয় ২ ডলার,
প্লাটিনাম ইউজারের আয় ৭ ডলার। আবার ১০০ থেকে ৪০০ মেগাবাইটের ফাইলের
ক্ষেত্রে আয় ৪ এবং ১৫ ডলার।
রেফারেল
আয় ২০%। কমপক্ষে ১৫ ডলার জমা হলে টাকা পাওয়া যায়। টাকা দেয়ার পদ্ধতি
ইপাশপোর্ট, পেপল এবং ওয়েবমানি। যদি এই পদ্ধতিতে টাকা পাওয়ার ব্যবস্থা থাকে
আপলোড করে আয়ের জন্য খুবই ভাল সাইট।
আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশের জন্য ১০ ডলার, রাশিয়ার জন্য ৫ ডলার দেয়। টাকা দেয়ার পদ্ধতি ইপাশপোর্ট, ওয়েবমানি, পেপল। রেফারেল আয় ১০%
প্রতি
হাজার ডাউনলোডের জন্য ২৫ ডলার। ফাইলের সাইজ কমপক্ষে ১ মেগাবাইট হতে হবে।
দেশ হিসেবে সিমাবদ্ধতা নেই তবে দেশগুলি ৪টি ভাগ আছে। সেই অনুযায়ী টাকা
কমবেশি হয়। রেফারেল আয় ২৫%। টাকা দেয় পেপল এবং ওয়েবমানির মাধ্যমে।
শুরুতে
আমেরিকা এবং রাশিয়ার জন্য থাকলেও বর্তমানে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ডাউনলোডের
জন্য টাকা দেয়। টাকার পরিমান নির্ভর করে ফাইল সাইজের ওপর। যেমন ১ থেকে ৪
মেগাবাইটের জন্য ২ ডলার, ২৫০ থেকে ২ গিগাবাইটের জন্য ১০ ডলার। টাকা দেয়
পেপল এবং ওয়েবমানির মাধ্যমে। রেফারেল আয় ২০%।
২০
মেগাবাইটের নিচের ফাইল হিসেব করা হয় না, ১২৫ মেগাবাইট এর বেশি হলে
আমেরিকায় ১ হাজার ডাউনলোডের জন্য দেয় ১০ ডলার। ইউরোপের কিছু উন্নত দেশের
জন্য ২ ডলার, ভারতসহ অষ্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ইত্যাদি অন্যান্য দেশের জন্য
১ ডলার। শুধুমাত্র পেপল এর মাধ্যমে টাকা দেয়।
প্রতি
হাজার ডাউনলোডের জন্য সবচেয়ে বেশি টাকা দেয় শেয়ারক্যাশ, ৬০০ ডলার। তবে এই
হিসেব শুধুমাত্র আমেরিকা এবং বৃটেনের ডাউনলোডের জন্য। অন্যান্য দেশের জন্য
টাকা দিলেও পরিমান কম। ফাইলের সাইজ কমপক্ষে ৫ মেগাবাইট হতে হয়। পেপল এবং
ইপাশপোর্ট এর মাধ্যমে টাকা দেয়। রেফারেল আয় ১০%।
এই
সাইটগুলি ছাড়াও আরো বহু সাইট রয়েছে আপলোড করে আয়ের জন্য। এভাবে আয় করতে
চাইলে অবশ্যই সার্চ করে সেগুলি পাবেন। সাধারন কিছু বিষয় এখানে লক্ষ্যনীয়,
. লাভজনক হওয়ার জন্য এমন কিছু আপলোড করতে হবে যা আমেরিকা-বৃটেনের ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করবে।
. অনেকেই পেপল এর মাধ্যমে টাকা দেয়। বাংলাদেশে পেপল ব্যবহার করা যায় না, ভারতে সীমিতভাবে ব্যবহার করা যায়।
. জনপ্রিয় ফাইলগুলি আপনি আপলোড করার আগেই আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলি থেকে আপোলোড করা হবে।
বাংলাদেশ
বা ভারত থেকে আপলোড করে সত্যিকারের আয়ের সুযোগ তাই অনেকটাই কম। যথেষ্ট
পরিমান আয়ের জন্য এদিকে যথেষ্ট পরিমান সময় দেয়া যেমন প্রয়োজন তেমনি জনপ্রিয়
ব্লগ/ওয়েবসাইট প্রয়োজন যেখান থেকে রেফারেল আয় আসতে পারে।
0 comments:
Post a Comment
THANKS FOR YOUR CO-OPERATION: